নাজিরপুরে বিদ্যালয় সংস্কারের নামে লুটপাট

পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের নামে এলজিইডির প্রকৌশলীর সহায়তায় অর্ধ কোটি টাকা লুট-পাটের অভিযোগ পাওয়া উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলার ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। এর সংস্কারের কাজ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্র্র্তৃক করার কথা থাকলেও প্রায় সকল বিদ্যালয়ের সংস্কারের কাজ করেছেন স্থানীয় সরকার দলীয় নেতারা। গত বছরের নভেম্বর মাসে বরাদ্দকৃত এ কাজ ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও গত মে মাসে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে সর্বশেষ বিল উত্তোলন করা হয়। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন মিয়ার সহায়তায় স্থানীয় সরকার দলীয়রা এ সংস্কারের কাজ ভাগিয়ে নিয়ে শতকরা মাত্র ২০ থেকে ৩০ভাগ বা তারও কম কাজ করেছেন বলে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অভিযোগ। সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত বিদ্যালয়গুলোর সরেজমিনে দেখা গেছে, মাত্র ৬ টি বিদ্যালয়ের সংস্কারের কাজ করেছেন এর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। তবে সেগুলোতেও কাজ হয়েছে বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক পরিমানেরও কম। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরা জানান, এর নামমাত্র কাজ করে সরকার দলীয় নেতারা প্রভাব খাটিয়ে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিলের স্বাক্ষর নিয়েছেন। উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের সংস্কার হওয়া বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শণ করে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ষোলশত রামনগর,
লক্ষ্মীদিয়া, বাকসী ও গড়ঘাটা এ ৪টি বিদ্যালয়ের সংস্কারের কাজ করেছেন উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান আতিয়ার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. সাইদুর রহমান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ওই সব বিদ্যালয়ের কাজের নিম্মমানের কারনে বিলের সুপারিশ না করায় শিক্ষা কর্মকর্তাকে সরকার দলীয়রা হুমকী প্রদান করেছে। এ ছাড়া শেখমাটিয়া ইউনিয়নের ওই ৪টি বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজের সাথে জড়িত শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিক্ষা কর্মকর্তাকে গালাগালি দিয়ে বিলে স্বাক্ষর নিয়েছেন। বাকসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়রে প্রধান শিক্ষিকা সুপ্রিয়া মন্ডল অভিযোগ করে জানান, শুধু মাত্র রং ছাড়া ওই বিদ্যালয়ের সংস্কারের কোন কাজই করেন নি সংশ্লিষ্টরা। তিনি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ কাজ করতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী তাদেরকে তার অফিসে নিয়ে ভয়-ভীতি দিয়ে ওই নেতাকে দিয়ে কাজ করিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি একাই এর বিল প্রদানের সাথে জড়িত না । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমেই এর বিল প্রদান করা হয়। তবে সর্বশেষ বিল প্রদানের সময় এখানে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হওয়ায় তার কোন সাক্ষাৎকার নেয়া সম্ভব হয় নি। কাজের সাথে জড়িত আ’লীগ নেতারা জানান, বিল উত্তোলন করতে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে শতকরা ২০ভাগ টাকা প্রদান করতে হয়েছে।
Share on Google Plus

About Unknown

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment