যা পেয়েছি, দিয়েছি কি তার চেয়ে বেশি?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আলোচিত এবং প্রায় রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতায় পূর্ণ ভারত সফরের প্রাপ্তি কী? এ প্রশ্নের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং অর্থবোধক উত্তরটি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। অবশ্য, প্রধানত হিন্দিভাষী শ্রোতাদের উদ্দেশে হিন্দিতে ‘দিদিকি সাথ বাত হুয়ি। পানি মাঙ্গা লেকিন ইলেকট্রিসিটি তো মিলা। কুছ তো মিল গ্যায়া’ (দিদির সঙ্গে তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে। পানি না পেলেও বিদ্যুৎ তো পেলাম। কিছু তো পেলাম)। ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি—বিজেপির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের এক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে কংগ্রেসঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হলেও অতীতে কংগ্রেস ঘরানার কোনো প্রতিষ্ঠান এ ধরনের সংবর্ধনার আয়োজন করেছে বলে মনে পড়ে না। সেদিক থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কংগ্রেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির বন্ধুত্ব লাভও কম নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সম্পর্কে অবশ্য বাংলাদেশের সরকার বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী যে দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলন করলেন, সেখানেও তাঁর বক্তব্যের উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল রাজনীতি। এর আগে প্রকাশিত দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির বাইরে নতুন তথ্য খুব বেশি একটা মেলেনি। যৌথ বিবৃতিটিও প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ৬২ অনুচ্ছেদের বিবৃতিটিতে অন্তত ১০টি বিষয়ে বিভিন্ন সমঝোতা, অঙ্গীকার ও প্রত্যাশার বিবরণ রয়েছে। এই সফরের সময়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পোর্টালে প্রকাশিত তালিকায় চুক্তি ও সম্মত স্মারকের সংখ্যা ২২ বলা হলেও তার অনুষঙ্গ হিসেবে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা আরও বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক অথবা সম্মত বিবরণী স্বাক্ষর  করেছেন।
সফরকারী যে বাংলাদেশি কর্তাব্যক্তি ৮ এপ্রিল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘এখনো গুনে উঠতে পারিনি’ বলে আসল সংখ্যা জানাতে পারেননি, তাতে তাঁকে দোষ দেওয়া যায় না। সহযোগিতা কখনোই একতরফা হয় না। সেখানে লেনদেনের বিষয় থাকে। সে কারণেই দ্বিপক্ষীয় লেনদেনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব হয়। তবে এখনো সেই হিসাবটা সবাই করে উঠতে পারেননি। সেটা না পারার দুটো সম্ভাব্য কারণ আছে। একটি হতে পারে অধিকাংশ বিষয়কেই সবাই গুরুত্বের দিক থেকে খুব বড় কিছু ভাবছেন না। অন্যটি হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি এমনই একটা বিষয়, যার ওপর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নির্ভরশীল। দিল্লিতে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারেক করিম একে লিটমাস টেস্ট বা আসল পরীক্ষা বলেছিলেন। আর বর্তমান হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছিলেন যে এবার চুক্তি না হলেও অন্তত একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করতে হবে। বাস্তবে আসল পরীক্ষায় পাস তো দূরের কথা, সময়সীমাও ঠিক করা গেল না। বরং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন প্রস্তাব দিয়ে আলোচনাকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছেন। ২০১১ সালে তিস্তার বিষয়ে একটি খসড়ায় উভয় দেশ যখন সম্মত হয়েছিল, তখন কিন্তু তিনি কোনো বিকল্পের কথা বলেননি। তখনো যেমন রাজনীতির কারণে তিনি রাজ্যের স্বার্থের দোহাই দিয়েছিলেন, এখনো সেটাই করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছেন। সম্ভবত যে অভিন্ন নদীর পানি থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হবে, সেই পানি আটকে রেখে উৎপাদন করা বিদ্যুতের কিছুটা তিনি বাংলাদেশে বিক্রি করতে আগ্রহী। যার মানে দাঁড়াবে, তিস্তার পানিশূন্যতার কারণে তৃষ্ণার্ত জনপদের কাছ থেকে তিনি বিদ্যুতেও মুনাফা তুলবেন। উভয় দেশের মধ্যে পানির ন্যায্য ভাগাভাগির বিষয়টি মানুষের জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি শুধু তিস্তার প্রশ্ন নয়, এখানে অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানি এবং অববাহিকার পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা তথা গঙ্গা ব্যারাজের বিষয়ও রয়েছে। কিন্তু যৌথ বিবৃতিতে এগুলোর কোনোটির বিষয়েই কোনো সুস্পষ্ট অঙ্গীকার নেই। অনেকে প্রশ্ন করেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে তিস্তাই কি একমাত্র সমস্যা। কিন্তু প্রশ্নটি অনেকাংশেই উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। এর কারণ কি এই যে তিস্তা বিতর্কে সবার নজর কেন্দ্রীভূত থাকলে আরও যে কয়েক ডজন চুক্তি-সমঝোতা হয়েছে, সেগুলোর খুঁটিনাটি কেউ খতিয়ে দেখবে না? সংবাদপত্রের পাতা এবং টেলিভিশন সংবাদের সীমিত পরিসরের কারণে সেটি সম্ভবও নয়। তবে অনুসন্ধানী চোখে বিশ্লেষণ করলে এর গভীরতা ও ব্যাপ্তি বোঝা যেতে পারে। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে, ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ নিরসনে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই প্রশংসনীয় যে ভূমিকা নিয়েছে, তা আরও বিস্তৃত হয়েছে। এই নিরাপত্তার বিষয়টি বেসামরিক বৃত্ত থেকে সম্প্রসারিত হয়ে সামরিক বা প্রতিরক্ষা খাতেও বিস্তৃত হয়েছে। যার মানে হচ্ছে, ভূরাজনৈতিক কৌশলগত দিক দিয়েও বাংলাদেশের অবস্থান বদলাচ্ছে বা বদলেছে। যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব প্রসঙ্গে বাংলাদেশের উদ্ভাবিত মডেল সার্কের কোনো উল্লেখ নেই। সেখানে আছে দক্ষিণ-এশিয়ার উপ-আঞ্চলিক গোষ্ঠী—বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল) এবং বিমসটেকের (বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড) কথা। এ ক্ষেত্রে আরেকটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে জাতিসংঘের সংস্কার বিতর্কে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের জন্য ভারতের দাবিকে সমর্থনের অঙ্গীকার। এ বিষয়ে চীন প্রকাশ্যেই তার বিরোধিতার কথা জানিয়ে আসছে। আবার বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে চীনের যে প্রাধান্য এত দিন বজায় ছিল, সেখানে এই প্রথম ভারত শরিক হলো। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, সামরিক বিশ্লেষকেরা আগে থেকেই বলে এসেছেন যে চীনা অস্ত্রসম্ভার ও প্রযুক্তির সঙ্গে অন্য দেশের সামরিক প্রযুক্তি সাজুয্যপূর্ণ নয়। দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তান ছাড়া আর কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের এ ধরনের সামরিক সহযোগিতার কোনো রেকর্ডের সন্ধান অনেক চেষ্টা করেও খুঁজে পাওয়া গেল না। অবশ্য কারও সঙ্গে তার গোপন কোনো চুক্তি হয়ে থাকলে সেটা অন্য কথা। যৌথ বিবৃতিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় উদ্যোগ কিংবা প্রকল্প রয়েছে জ্বালানি খাতে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ, ডিজেল, তরলীকৃত গ্যাস এবং পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের যেসব প্রকল্পের কথা আছে, তার মধ্যে যেমন আছে সরকারি উদ্যোগ, তেমনি আছে বেসরকারি খাতের কথা। এতে করে বাংলাদেশের আগামী দিনের জ্বালানি চাহিদার অনেকটাই হয়তো পূরণ হবে। বস্তুত সরকারি যে ঋণপ্রস্তাব তার উল্লেখযোগ্য অংশই বিনিয়োগ হবে জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতের অবকাঠামো নির্মাণে। এর মধ্যে  ট্রান্স বাউন্ডারি পাইপলাইনও আছে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তে জ্বালানি পরিবহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
আছে কুতুবদিয়ায় এলএনজি টার্মিনালের কথা। আবার বেসরকারি খাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যে ৯০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছেন তার ৬০০ কোটি ডলারই হবে জ্বালানি খাতে। ফলে জ্বালানির জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাবে। জ্বালানি নিরাপত্তার দিক থেকে তাই বলতেই হবে যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা তাই ভারতের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত হয়ে পড়ল।  বাংলাদেশের যেসব উদ্যোক্তা বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জ্বালানি খাতে এত দিনে সক্ষমতা অর্জন করেছেন তাঁদের আক্ষেপ যে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের সরকার যেসব সুবিধা দেবে তার কিছুটা তাঁরা পেলে দেশের ভেতরে নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো যেত (বণিক বার্তা, ১০ এপ্রিল ২০১৭)। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের প্রশ্নে যেসব সমঝোতা ও আকাঙ্ক্ষা যৌথ বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে প্রভূত সম্ভাবনার কথা আছে। বস্তুত, ৯০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। ভারতের জন্য চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আলাদা অর্থনৈতিক এলাকা প্রতিষ্ঠার কথা আছে। সীমান্তে শুল্ক কেন্দ্র এবং সমন্বিত পরীক্ষাচৌকির সংখ্যা বাড়ানো এবং সেগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা আছে। বাংলাদেশের পাট রপ্তানির ওপর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি ভারত বিবেচনা করার কথা বলেছে। কিন্তু একই সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু সুনির্দিষ্ট পণ্যের ওপর নির্ধারিত যে ‘ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য’ চালু আছে, তাকে যৌথ বিবৃতিতে ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। (বাংলাদেশের বিশাল ব্যবসায়ীবহর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা কীভাবে  নিজেদের ঠিক করা ন্যূনতম রপ্তানিমূল্যকে বৈষম্যমূলক অভিহিত করতে সম্মত হলেন, তা অবশ্য বোধগম্য নয়।) ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ বাগ্‌ধারার সঙ্গে দ্বিমত করার কিছু নেই। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের লাগামহীন ঘাটতির দিকটি বিবেচনায় নিলে লাভের পাল্লাটি প্রতিবেশীর দিকেই ঝোঁকে। সংযুক্তি বা কানেকটিভিটি-বিষয়ক প্রস্তাবে সড়ক, রেল, নৌ ও সমুদ্রপথ এবং আকাশপথেও যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রতিযোগিতার সামর্থ্যের কারণে এসব ক্ষেত্রে ভারতীয় পরিবহন সংস্থাগুলোর জন্য যে অধিকতর সুযোগ তৈরি হবে, তাতে সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদারত্ব হিসেবে ভারত অবকাঠামো নতুন করে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার কথা বলেছে। যৌথ বিবৃতিতে এটিকে তৃতীয় ঋণ বা লাইন অব ক্রেডিট অভিহিত করা হয়েছে। সেখানে প্রথম পর্যায়ের ঋণ ৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের প্রকল্পগুলোর অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ঋণ হিসেবে প্রতিশ্রুত ২০০ কোটি ডলারের জন্য প্রকল্প চিহ্নিতকরণের অগ্রগতিতেও তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যার মানে হচ্ছে, দ্বিতীয় দফা ঋণ এখনো প্রস্তাবের পর্যায়ে রয়ে গেছে। অভিজ্ঞ কূটনীতিকেরা অবশ্য ভারতীয় ঋণের শর্তের দিকগুলো নিয়ে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করে থাকেন এবং সেটাকেই এই ঋণ ব্যবহারে শ্লথগতির অন্যতম কারণ বলে অভিহিত করেন। বিবৃতিতে অনেকটা অংশজুড়ে তুলে ধরা সফরের নানা আনুষ্ঠানিকতা, বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের বিবরণগুলো বাদ দিয়ে অন্য ১০টি উপশিরোনামের নিচে নানা ধরনের উদ্যোগ, প্রকল্প, পদ্ধতি কিংবা কাঠামোর বিষয়ে সমঝোতা কিংবা চুক্তির কথা বলা হয়েছে। ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্কের উপশিরোনামে শান্তি ও যৌথ সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করা থেকে শুরু করে প্রতিবছর ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধার ভারতে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা এবং মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারী ১০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে আরও পাঁচ বছর বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণাও আছে। অংশীদারত্ব টেকসই করার লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের সফর উপশিরোনামে নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন ও সংযোগ (কানেকটিভিটি) খাতে নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে গঠিত যৌথ পরামর্শক কমিশনের আগাম বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠানের সমঝোতার কথা বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এরপর আছে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য একযোগে কাজ করার প্রসঙ্গ, যেখানে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এই অঞ্চল এবং তার বাইরেও জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রশ্ন; একে অন্যের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে কেউ কারও বিরুদ্ধে যাতে তৎপরতা চালাতে না পারে, সেই অঙ্গীকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর অধিকতর সমন্বয় ও সহযোগিতার কথা। এগুলো থেকে স্পষ্ট ধারণা মেলে যে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করতে আমরা সাধ্যমতো সব সহযোগিতার অঙ্গীকারই করেছি। বৃহত্তর অর্থনীতির বৃহত্তর লাভ একেবারে অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তাতেও কিছুটা ন্যায়পরায়ণতার প্রশ্ন থাকে। বহুমাত্রিক সম্পর্কে অর্থনীতির পাশাপাশি ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসম্পদ এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোতে ভারসাম্য অথবা ন্যায্যতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সামগ্রিক পর্যালোচনায় সেই ভারসাম্য দেখা যাচ্ছে না। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়, আমরা যা পেয়েছি, দিয়েছি কি তার চেয়ে বেশি?
কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।
Share on Google Plus

About Unknown

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment