
পাকিস্তানের
ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারে এর চেয়ে বেশি নাটক হওয়া সম্ভব ছিল না। প্রথম বলেই
উইকেট হারাল পাকিস্তান। রান নিতে গিয়ে বাবর আজম আর আহমেদ শেহজাদ মুখোমুখি
ধাক্কা খেলেন। মিডঅনে ক্যাচও পড়ল। এর পরপরই উইকেটকিপার শাই হোপ দুর্দান্ত
ক্যাচ নিয়ে আশা জাগালেন। কিন্তু নাটক ওই পর্যন্তই। ২৩৪ রান তাড়া করতে গিয়ে
একপর্যায়ে ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা পাকিস্তান শেষে কোনো ক্লাইম্যাক্স
জমতে দিল না। ৬ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়ে পিছিয়ে থেকে শুরু করা পাকিস্তান
সিরিজ জিতল ২-১ ব্যবধানে। ১৯৯১ সালের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ
জেতে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ! শোয়েব মালিকের দারুণ সেঞ্চুরি, মোহাম্মদ হাফিজের
৮১, আর চতুর্থ উইকেটে এই দুজনের ১১৩ রানের জুটি শুরুর ধাক্কা সামলে নিয়েছিল
দারুণভাবে। হাফিজ ফিরে গেলে অধিনায়ক সরফরাজকে নিয়ে ৮৭ রানের জুটি গড়ে বাকি
কাজটুকু সেরে ফেলেন মালিক। ১১১ বলে ১০টি চার ও ২ ছক্কায় শেষ পর্যন্ত ১০১
রানে অপরাজিত ছিলেন। ওয়ানডেতে মালিকের এটি নবম সেঞ্চুরি। এর আগে হোপের ৭১
আর প্রথম ম্যাচের নায়ক জেসন মোহাম্মদের ৫৯ স্বাগতিকদের ২৩৩ রানের পুঁজি এনে
দিয়েছিল। এখনকার ক্রিকেটে এ কোনো রানই নয়। যদি না দারুণ এক শুরু এনে দেয়
বোলাররা। গ্যাব্রিয়েল আর হোল্ডার মিলে তা এনেও দিয়েছিলেন। ৯ ওভারের মধ্যে ৩
উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান পড়ে গিয়েছিল চাপে। এমনিতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে
তাদের গড়বড় করার রেকর্ডটা চোখে বেঁধার মতো। সর্বশেষ এমন ১৪ ম্যাচের ১২টিতেই
তারা হেরেছিল। কিন্তু মালিক ও হাফিজের অভিজ্ঞতা পাকিস্তানকে ক্যারিবীয়
সমুদ্রের ঝড় সামলে নিতে সাহায্য করল। প্রথমে দেখে-শুনে সুস্থিরভাবে আগে
‘আফটার শক’ সামলেছেন। এরপর করেছেন পাল্টা আঘাত।
পাকিস্তানি বোলারদের
কৃতিত্বটা আড়ালে চলে যাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসটা আরও বড় হলে ৩৬/৩-এর
চাপ এভাবে নাও সামলাতে পারতেন মালিক-হাফিজ। আস্কিং রান রেটটা সব সময়
স্বস্তির ঘরে ছিল বলেই ঝুঁকি নিতে হয়নি তাঁদের। আর এতে মূল কৃতিত্ব ওয়েস্ট
ইন্ডিজকে সহজে রান তুলতে না দেওয়া পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। গায়ানার
স্পিন সহায়ক উইকেটে ইমাদ ওয়াসিম যেমন ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১
উইকেট, মোহাম্মদ হাফিজ উইকেট না পেলেও ৭ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২১ রান। আবার
পেসার মোহাম্মদ আমির (৯ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট) বা হাসান আলিরাও (৬ ওভারে
২৯ রানে ১ উইকেট) করেছেন দারুণ বোলিং। অবশ্য পাকিস্তানের নতুন বোলিং
সেনসেশন শাদাব খান ২ উইকেট নিলেও ৮ ওভারে দিয়েছেন ৫৭ রান। অবশ্য ষষ্ঠ বোলার
হিসেবে শাদাবকে জমিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক সরফরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজও ততক্ষণে
হাতখুলে মারতে শুরু করেছিল। ৪০ ওভার শেষে যে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে মোটে
১৬১। হাতে উইকেট থাকলেও শেষ ১০ ওভারে ৭২-এর বেশি তারা তুলতে পারেনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনভিজ্ঞ এই দলটা আসলে সেই একই সমস্যায় ভুগছে। কালও যেমন
প্রথম ৮ ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েও পুরো ইনিংসে মাত্র দুটি ফিফটি।
0 comments:
Post a Comment