
দুর্নীতির
দায়ে অভিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন-হেকে বরখাস্ত করেছেন
দেশটির সাংবিধানিক আদালত। দুর্নীতির কেলেঙ্কারির জেরে পার্লামেন্টে
অভিশংসন প্রস্তাব পাস হওয়ার পর দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত গতকাল শুক্রবার এ
রায় দিয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ের ফলে পার্ক গিউন-হে আর দায়মুক্তির
সুবিধা পাচ্ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে এখন মামলা এবং তদন্ত করা যাবে। আট
বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত সাংবিধানিক আদালত সর্বসম্মতিক্রমে পার্লামেন্টে
অনুমোদিত অভিশংসন উদ্যোগের পক্ষে রায় দিয়েছেন। রায়ে আদালত বলেছেন,
প্রেসিডেন্ট গিউন-হের কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রের চেতনা ও আইনের শাসনের গুরুতর
ক্ষতি করেছে। তাঁকে বরখাস্ত করা হলো। আদালতের বাইরে প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা
ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পুলিশ বলেছে, সহিংস বিক্ষোভে দুজন নিহত
হয়েছে। পার্ক গিউন-হে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। সাবেক
সামরিক কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং–হির মেয়ে। তিনিই দেশটির প্রথম
প্রেসিডেন্ট, যিনি অভিশংসিত হয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালত গিউন-হের অভিশংসনের
পক্ষে রায় দেওয়ায় দুই মাসের মধ্যে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন
করা হবে। পার্লামেন্টে গিউন-হের অভিশংসনের পক্ষে ভোট পড়ার পর থেকে
প্রধানমন্ত্রী কিও-আন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আগামী ৯ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে।
দেশটির নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে
নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রেসিডেন্ট পদে থাকার ফলে এত দিন বিচার
থেকে দায়মুক্তির আওতায় ছিলেন গিউন-হে। কিন্তু এখন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে
বিচারের মুখোমুখি করা যাবে। পার্ক গিউন-হের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সদ্য
বরখাস্ত হওয়া প্রেসিডেন্ট এখনই রাষ্ট্রীয় ভবন ‘ব্লু হাউস’ ছাড়ছেন না। কারণ,
রাজধানী সিউলে তাঁর ব্যক্তিগত বাসা এখনো প্রস্তুত হয়নি। রায়ে খুশি হলেও
গিউন-হে প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় ভবন না ছাড়ায় তাঁর বিরোধীরা ক্ষুব্ধ। তারা
ব্লু হাউস ছাড়ার দাবি করে বিক্ষোভ করছে। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট কিও-আন। সিউলের বিভিন্ন রাস্তায় অতিরিক্ত
পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পার্ক গিউন-হের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী চোই সুন-সিল
ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর এ সংকটের
সূচনা হয়। চোই সুন-সিল কোনো সরকারি পদে না থাকলেও ব্যাপক প্রভাবের
অধিকারী ছিলেন বলে মনে করা হয়। লাখো ক্ষুব্ধ মানুষ পার্ক গিউন-হের
পদত্যাগের দাবিতে দিনের পর দিন রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ করে। এর
ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বরে পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাঁকে
অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয়।
0 comments:
Post a Comment